ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

বিচারের আশায় ৬ মাস ধরে গ্রাম আদালতে আসে আর যায় পেকুয়ার বাদশা

পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর ইউপির সিরাদিয়া এলাকার মৃত আবু তৈয়বের ছেলে মোস্তফা সরওয়ার বাদশা। দীর্ঘ ২০১৬ সাল থেকে বিরোধ চলছে তার সহোদর মোস্তফা কামাল এর সাথে।

সেই সময় মারধরের অভিযোগ ও বিরোধ মিমাংসার জন্য পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। থানা প্রশাসন বিরোধ মিমাংসা করে দেয়ায় বেশ কিছু সময় শান্তিতে বসবাস করছিলেন অসহায় ছরওয়ার।

কিন্তু সেই আগের বিরোধ মিমাংসা হলেও বিগত ২০১৯ সালে ৩০ আগস্ট মোস্তফা ছরওয়ার, স্ত্রী রুবী আক্তারসহ তার পরিবারের উপর হামলা ও বসতভিটা ভাংচুর চালায় সহোদর মোস্তফা কামাল, তার স্ত্রী ফরিদা বেগম, সন্তান কাজল ও খোকন আরা।

এ ঘটনায় মোস্তফা ছরওয়ারের স্ত্রী ভিকটিম রুবী আক্তার বাদী হয়ে পরের দিন চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন। যার নং ৯১৫/১৯।

বিজ্ঞ আদালত সেই সময় মামলাটি আমলে নিয়ে পেকুয়া থানাকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বললে থানার সাবেক এসআই শফিকুল ইসলাম দীর্ঘ তদন্ত ও সাক্ষীদের বয়ান নিয়ে মারধরের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক শুনানী শেষে মামলাটি দ্রুত শেষ করার জন্য পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে পাঠিয়ে দেন।

বিগত ৬ মাস আগে মামলাটি গ্রাম আদালতে আসার পর ইউপি সদস্য সাজ্জাদ গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বৈঠক না করে নিজ থেকে মামলাটি তার জিম্মায় নিয়ে নেয়। বিবাদীদের বেশ কয়েকবার নোটিশ দেয়ার পর হাজির হয়। এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য সাজ্জাদ বাদীকে অলিখিত স্টাম্পে সাক্ষর দিতে বলেন। কেন সাক্ষর জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সাজ্জাদ মামলার বাদী রুবী আক্তারের স্বামী মোস্তফা ছরওয়ারকে মারধর করার চেষ্টা করেন। এমনকি অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়ে বিবাদীদের পক্ষে রায় দিয়েছেন বলে মৌখিকভাবে জানান। এরপর থেকে আরো বেশ কয়েকবার ভুক্তভোগীরা ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন ধরণের সাড়া দেননি। গ্রাম আদালতে একটি বিচারের সুরহা পেতে দীর্ঘ ৬ মাস ধরে ইউপির গ্রাম আদালতে আসা যাওয়া করলেও শুধু হয়রানির শিকার হয়েছেন।

রবিবার (২০জুন) দুপুরে ভুক্তভোগী মোস্তফা ছরওয়ার সাংবাদিকদের কার্যালয়ে এসে সঠিক বিচারটা পেতে সহযোগিতা কামনা করেন।

তিনি বলেন, আমি ভাই ও তার পরিবারে অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ। এমনকি কথায় কথায় মারধর করে। একটি বিচারের আশায় দীর্ঘ ৬ মাস ধরে গ্রাম আদালতে যাচ্ছি আর আসতেছি। কোন ধরণের সুরহা পাচ্ছিনা। সর্বশেষ ইউপি সদস্য সাজ্জাদ বিবাদীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমাকে লাঞ্চিত করার পাশাপাশি জানিয়ে দেয় বিবাদীদের পক্ষে তিনি রায় দিয়ে দিয়েছেন। আমি তার কাছে হয়রানির শিকার হয়েছি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সাজ্জাদ তার অভিযোগ সত্য নয় দাবী করে বলেন, আদালত থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিষয়টি সুরহা করে দেয়ার জন্য। দুই পক্ষের লোকজন নিয়ে বৈঠকও করেছি। বৈঠকে সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে যতটুকু প্রমাণ পেয়েছি তার মধ্যে বিবাদীদেরকে কিছু টাকা জরিমানা করেছি। কিন্তু বাদী পক্ষে চাওয়া বিবাদীদের জেলে দিতে হবে। সেই এখতিয়ার আমাদের কাছে নাই। তাকে মারধর ও লাঞ্চিত করার কথা মিথ্যা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান এম বাহাদুর শাহ বলেন, আমিতো প্রতিদিন গ্রাম আদালতের কার্যালয়ে বসি। এমন কোন অভিযোগ থাকলে আমাকে জানাতে পারে। ইউপি সদস্য সাজ্জাদ যদি কোন অন্যায় করে থাকে ভুক্তভোগীরা আমার সাথে যোগাযোগ করে তাহলে সুরহা করে দিব।

পাঠকের মতামত: